ঢাকা , শুক্রবার, ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫ , ২০ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
সংবাদ শিরোনাম
সুষ্ঠু ভোটের পরিবেশ চান সাধারণ শিক্ষার্থীরা তারেক রহমান-বাবর খালাস আস্থার সংকটে প্রশাসন ও অর্থনীতি অন্তর্বর্তী সরকারের দায়হীন কর্মকাণ্ডে বিপন্ন মানবাধিকার ক্ষমতা বদলের জন্য জুলাই বিপ্লব হয়নি- জামায়াত গাইবান্ধায় কষ্টিপাথরের মূর্তি উদ্ধার, আটক ৩ ধূমপান নিয়ে তর্ক, পরিবহন কাউন্টারে হামলা-ভাঙচুর দুদকের মামলায় খালাস মীর নাসির ও মীর হেলাল রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে আসিয়ানকে এগিয়ে আসার আহ্বান স্বর্ণ ব্যবসায়ীরাই টার্গেট ডাকাতদের গ্রেফতার ৭ আদাবরে পুলিশের ওপর হামলা কারাগারে ১১ আসামি নির্বাচন না হলে অনাকাক্সিক্ষত পরিস্থিতি তৈরি হবে- সাইফুল হক প্রধান শিক্ষকের ২১৬৯ পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি বাতিল দাবি ডিবি পরিচয়ে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে গ্রেফতার ৭ সিদ্ধান্তহীনতায় আটকে আছে পরিবহন চালকদের বিশ্রামাগার তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন শক্তিশালী করার কোনো বিকল্প নেই ভেজাল ওষুধ সেবনে বাড়ছে মৃত্যুর হার পোরশায় ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সদস্য ও কর্মী সম্মেলন অনুষ্ঠিত পোরশায় বিএনপি'র উৎসবমুখর পরিবেশে প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালিত রাজধানীতে বকেয়া বেতনের দাবিতে শ্রমিকদের সড়ক অবরোধ
* ডাকসু নির্বাচন নিয়ে কোনো রিট শুনব না : হাইকোর্ট * নির্বাচনকে সামনে রেখে বাড়ছে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা * সাইবার অপরাধে ছাড় নেই, নেওয়া হবে কঠোর পদক্ষেপ * ডাকসুতে জেতা লাগবে না, বেঁচে থাকতে চাই: আব্দুল কাদের

সুষ্ঠু ভোটের পরিবেশ চান সাধারণ শিক্ষার্থীরা

  • আপলোড সময় : ০৫-০৯-২০২৫ ১২:১৩:০২ পূর্বাহ্ন
  • আপডেট সময় : ০৫-০৯-২০২৫ ১২:১৩:০২ পূর্বাহ্ন
সুষ্ঠু ভোটের পরিবেশ চান সাধারণ শিক্ষার্থীরা
নানা জটিলতার অবশান ঘটিয়ে আগামী ৯ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন। ওইদিন সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত ৮ টি কেন্দ্রে ভোট হবে। তবে নির্বাচনের দিন সকল ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ থাকবে। চূড়ান্ত তালিকা অনুযায়ী এবার মোট ৪৭১ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। ভিপি পদে ৪৫ জন, জিএস পদে ১৯ জন, এজিএস পদে ২৫ জন, আর বিভিন্ন সম্পাদক ও সদস্য পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন বাকিরা। এরইমধ্যে ডাকসু’র ভোটকে ঘিরে উত্তপ্ত হয়ে উঠছে দেশের সবচেয়ে বড় বিদ্যাপীঠ ঢাবির ক্যাম্পাসের রাজনীতি। আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরুর পর ছাত্রদল ও ছাত্রশিবিরের প্রার্থীদের মধ্যে শুরুতে সৌহার্দ্য দেখা গেলেও ধীরে ধীরে সেটি রূপ নিচ্ছে চরম বিরোধে। কেউ কেউ নির্বাচনকে ঘিরে সহিংস্বতা-সংঘাতের আশঙ্কাও করছেন। স্বস্তির বিষয় হচ্ছে-ডাকসু নির্বাচন নিয়ে আর কোনো রিট শুনবে না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছে হাইকোট। তবে সুষ্ঠু ভোটের পরিবেশ চান সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
সুষ্ঠু ভোটের পরিবেশ চান সাধারণ শিক্ষার্থীরা: আর ৪দিন পরই অনুষ্ঠিত হচ্ছে ডাকসু নির্বাচন। এই নির্বাচনকে ঘিরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে চলছে জমজমাট নির্বাচনী প্রচারণা। প্রার্থীরা ক্যাম্পাসে ঘুরে ঘুরে ভোটারদের মন জয় করার চেষ্টা করছেন। এমনিতে দীর্ঘদিন পর ছাত্র সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। তার ওপর আওয়ামী লীগের ফ্যাসিবাদের আমলে দেশে নির্বাচন ও ভোটের সুষ্ঠু পরিবেশ ছিল না। এ কারণে ছাত্র সংসদ নির্বাচন দেশে নির্বাচনের আবহ ফিরিয়ে এনেছে। দেশের মানুষের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে ডাকসু নির্বাচন। তবে ডাকসু নির্বাচনে উৎসাহ-উদ্দীপনার পাশাপাশি সুষ্ঠু ভোটের পরিবেশ চান সাধারণ শিক্ষার্থীরা। ঢাবির অপরাধবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মুস্তাহিদ রিয়াদ। তিনি বলেন,ছয় বছর পর ফ্যাসিবাদমুক্ত ডাকসু নির্বাচন হচ্ছে। এমন উৎসবের আমেজ আগে কখনো ক্যাম্পাসে দেখিনি। সবার আনন্দ দেখে মনে হচ্ছে, ডাকসুর মধ্য দিয়ে যেন নতুন এক রাজনীতির যাত্রা শুরু হচ্ছে। এখন একটাই প্রত?্যাশা একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন, যেন শিক্ষার্থীরা যাঁকে যোগ্য প্রার্থী মনে করেন, তাঁকেই নির্দ্বিধায় ভোট দিতে পারেন। তিনি বলেন, লম্বা ট্রেনের মতো বিশাল বিশাল ইশতেহার দিচ্ছেন প্রার্থীরা। অথচ তাঁরা অনেকে হয়তো জানেনও না যে ডাকসুর কর্মপরিধি কতটুকু বিস্তৃত। ডাকসুকে শুধু মতাদর্শিক লড়াইয়ের ক্ষেত্র বানালেই তো হবে না। প্রয়োজন সত্যিকারের শিক্ষার্থীবান্ধব সংস্কার। আমি মনে করি, নির্বাচিত প্রতিনিধিদের সবার আগে দুটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ করতে হবে। প্রথমত, হলগুলোতে শিক্ষার্থীদের মৌলিক চাহিদা পূরণ নিশ্চিত করা; দ্বিতীয়ত, প্রয়োজনীয় একাডেমিক সংস্কার। এর মধ্যে আছে সিলেবাসের গুণগত পরিবর্তন, বিভাগগুলোর শিক্ষার মান বাড়ানো এবং শিক্ষার্থীদের আধুনিক প্রযুক্তির সঙ্গে দক্ষ হিসেবে গড়ে তোলা। নির্বাচিত প্রার্থীদের এমন অনেক বিষয়েই আওয়াজ তুলতে হবে। ঢাবির জাপানিজ স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী মারিয়া রহমান। তিনি বলেন, ২০২৩ সালে ক্যাম্পাসে আসি। তৎকালীন রাজনৈতিক বাস্তবতায় ছাত্র থাকা অবস্থায় ডাকসু নির্বাচন দেখতে পারব কি না, এ নিয়ে যথেষ্ট সন্দিহান ছিলাম। সেই জায়গা থেকে অবশ্যই এবারের ডাকসু নির্বাচন আশাব্যঞ্জক মনে হচ্ছে। নির্বাচনী পরিবেশ এখন পর্যন্ত তেমন অস্থিতিশীল নয়, কিছুটা রাজনৈতিক সহাবস্থানও আছে। সব মিলিয়ে শিক্ষার্থীদের দাবি কর্তৃপক্ষের কাছে উত্থাপনের এই যে একটা প্ল্যাটফর্ম তৈরি হচ্ছে, এটাই শিক্ষার্থী হিসেবে আমাকে আনন্দিত করছে। তবে কিছু মৌলিক বিষয়, যেমন আবাসনসংকট নিরসন, মানসম্মত ক্যানটিন স্থাপন, নারীদের জন্য নিরাপদ ক্যাম্পাসের নিশ্চয়তা, অনাবাসিক নারীদের হলে প্রবেশের সুযোগ করে দেওয়া, সেন্ট্রাল লাইব্রেরির সুবিধা উন্মুক্ত করা—ভোটার হিসেবে প্রতিনিধিদের কাছে এগুলোই আমার প্রথম প্রত্যাশা। ঢাবির প্রাচ্যকলা বিভাগের চারুকলা অনুষদের শিক্ষার্থী প্রগতি চাকমা। তিনি বলেন, নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ক্যাম্পাসে বেশ উৎসবমুখর একটা পরিবেশ তৈরি হয়েছে। আমাদের মধ্য থেকে বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর অনেক পরিচিত মুখ নতুন নেতৃত্বের জন্য উঠে এসেছেন, যা নির্বাচনে একধরনের বৈচিত্র্যপূর্ণ সৌন্দর্য ফুটিয়ে তুলেছে। ফলে পছন্দের প্রার্থীদের নির্বাচনের ক্ষেত্রে প্রায় সবার মধ্যেই একটা অন্য রকম আমেজ কাজ করছে। সুস্থ–স্বাভাবিকভাবেই যেন নির্বাচনপ্রক্রিয়া শেষ হয়, এটাই এখন প্রত্যাশা। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনও এ ব্যাপারে বেশ শক্ত অবস্থানে আছে বলেই মনে হচ্ছে।
সাইবার অপরাধে ছাড় নেই, নেওয়া হবে কঠোর পদক্ষেপ: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে প্রার্থীদের প্রচারণায় কোনো কোনো ক্ষেত্রে অতীতের কর্মকাণ্ড নিয়ে সাইবার বুলিং এবং ব্যক্তিগত চরিত্রহননের চেষ্টা এবং বিশেষ করে নারী প্রার্থীদের  নানাভাবে সাইবার বুলিংয়ের ঘটনায় কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে  বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে জানানো হয়েছে, ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচন ২০২৫ আগামী ৯ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। নির্বাচনে প্রার্থীদের প্রচারণাকালে কোনো কোনো ক্ষেত্রে অতীতের কর্মকাণ্ড নিয়ে সাইবার বুলিং এবং ব্যক্তিগত চরিত্রহননের চেষ্টা চালানো হচ্ছে। বিশেষত ছাত্রী প্রার্থীদের নিয়েও নানাভাবে সাইবার বুলিংয়ের ঘটনা ঘটছে। যা মানবাধিকার পরিপন্থী। কারো বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ প্রমাণিত হলে রিটার্নিং কর্মকর্তা কর্তৃক গঠিত ডাকসু আচরণবিধি সংক্রান্ত টাস্কফোর্স এবং সাইবার নিয়ন্ত্রণ সেলের মাধ্যমে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। পাশাপাশি সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার কথাও জানানো হয়েছে। রিটার্নিং কর্মকর্তারা স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন, ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে সাইবার বুলিং কিংবা অপপ্রচারের বিষয়ে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।
যে ইস্যুতে উত্তেজনা ছড়িয়েছে ক্যাম্পাসের ভেতরে-বাইরে: ডাকসু নির্বাচনে ছাত্রশিবির সমর্থিত প্যানেলের জিএস প্রার্থী এস এম ফরহাদের প্রার্থিতা চ্যালেঞ্জ করে করা রিট নিয়েও উত্তেজনা ছড়িয়েছে ক্যাম্পাসের ভেতরে-বাইরে। প্রথম দিনে নির্বাচন স্থগিতের আদেশের পর ক্যাম্পাসজুড়ে প্রতিবাদ মিছিল হয়। পরে আদেশ স্থগিত হওয়ায় পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হয়। গত বুধবার ডাকসু নির্বাচন নিয়ে তৈরি আইনি জটিলতার নিষ্পত্তি করে আপিল বিভাগ। রায়ে হাইকোর্টের রায় স্থগিত করে দিয়ে চেম্বার আদালতের আদেশ বহাল রাখা হয়। ফলে ৯ সেপ্টেম্বরের ডাকসু নির্বাচনের বাধা কেটে যায়। এতে স্বস্তি ফিরলেও একইদিনে নির্বাচনে প্রার্থিতা ও ব্যালট নম্বর পুনর্বহালের নির্দেশনা চেয়ে রিট করেছেন স্বতন্ত্র ভিপি প্রার্থী মো. জুলিয়াস সিজার তালুকদার। চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকায় নাম ও ব্যালট নম্বর পুনর্বহাল না করা পর্যন্ত ডাকসু নির্বাচন স্থগিতের নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে। নির্বাচনের পাশাপাশি ডাকসু হল সংসদ নির্বাচনও স্থগিত করার নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে। ফলে শেষ পর্যন্ত আবারও কোনো আইনি জটিলতা তৈরি হয় কিনা সেই শঙ্কা করছেন অনেকে।
ডাকসু নির্বাচন নিয়ে কোনো রিট শুনবে না হাইকোর্ট: ডাকসু নির্বাচনে প্রার্থিতা ও ব্যালট নম্বর পুনর্বহালের নির্দেশনা চেয়ে মো. জুলিয়াস সিজার তালুকদারের রিট শুনতে অপরাগতা প্রকাশ করেছেন হাইকোর্ট। আদালত বলেছেন, ডাকসু নির্বাচন নিয়ে আপিল বিভাগে সিদ্ধান্ত হয়েছে। আমরা ডাকসু নির্বাচন নিয়ে কোনো রিট শুনব না। বৃহস্পতিবার বিচারপতি আকরাম হোসেন চৌধুরী ও বিচারপতি ফয়েজ আহমেদের হাইকোর্ট বেঞ্চ এসব মন্তব্য করেন। বেঞ্চের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি আকরাম হোসেন চৌধুরী রিটকারীর আইনজীবী সরদার আবুল হোসেনকে উদ্দেশ্যে করে বলেন, ডাকসু নির্বাচন নিয়ে আগে রিট নিয়ে এসেছিল। আমরা ফিরিয়ে দিয়েছি। ঢাবির ভিসি আমার আত্মীয়। তা ছাড়া, ডাকসু নির্বাচন নিয়ে আপিল বিভাগ ইনটারফেয়ার করেছে। তাই আমরা ডাকসু নির্বাচন নিয়ে কোনো রিট শুনব না। আদালত বলেন, আপনারা ভুল বুঝিয়ে রিটটি মেনশন করেছেন। আমরা যদি জানতাম এটা ডাকসু নির্বাচন নিয়ে, তাহলে এটা নিতাম না। পরে আদালত রিট আবেদনটি কার্যতালিকা থেকে বাদ দেন। এ সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে আইনজীবী শিশির মনির উপস্থিত ছিলেন। এর আগে বুধবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে প্রার্থিতা ও ব্যালট নম্বর পুনর্বহালের নির্দেশনা চেয়ে রিট করেন মো. জুলিয়াস সিজার তালুকদার; যিনি ডাকসু নির্বাচনে ভিপি প্রার্থী হয়েছিলেন। চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকায় নাম ও ব্যালট নম্বর পুনর্বহাল না করা পর্যন্ত ডাকসু নির্বাচন স্থগিতের নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে রিটে। ডাকসু নির্বাচনের পাশাপাশি ডাকসু হল সংসদ নির্বাচনও স্থগিতের নির্দেশনা চাওয়া হয়। জুলিয়াস সিজার তালুকদারের নাম ও ব্যালট নম্বর চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা থেকে বাদ দেওয়া এবং তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ তদন্তে বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটের তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, মর্মে রুল জারির আরজি জানানো হয় রিটে। সাম্প্রতিক সময়ে একে অপরের বিরুদ্ধে ‘ধর্ষণের হুমকি’ দেওয়ার অভিযোগ তুলে পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি করেছে সংগঠন দুটি। কর্মসূচিতে হুমকি-ধামকি আর বিষোদগারে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে উদ্বেগ বেড়েছে। শুধু ছাত্রদল শিবির নয়, অন্য সংগঠনের প্রার্থীরাও একে অপরের বিরুদ্ধে নেতিবাচক প্রচারণায় নেমেছেন। নির্বাচনের আনুষ্ঠানিকতা শুরুর পর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছাত্রদল ও শিবিরের প্রার্থীরা অনেক ক্ষেত্রেই একসঙ্গে অবস্থান করতে দেখা যায়। শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর রাজনৈতিক মতাদর্শে ভিন্নতা থাকলেও অবাধ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের ক্ষেত্রে ইতিবাচক অবস্থান দেখা গিয়েছিল জুলাই–আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের সক্রিয় থাকা ছাত্র সংগঠন দুটির নেতাদের। তবে ডাকসু নির্বাচন ঘিরে একাধিক বিতর্কিত ইস্যু সামনে আসার পর থেকে পরিস্থিতি পাল্টাতে থাকে। ছাত্রশিবিরের ফেস্টুন ভাঙা, একজন প্রার্থীর সাধারণ শিক্ষার্থীকে আহত করা নিয়ে উত্তাপ বাড়তে থাকে। একপর্যায়ে ছাত্রদলের পক্ষ থেকে অভিযোগ তোলা হয়,শিবিরের কয়েকজন কর্মী তাদের নারী প্রার্থীদের ‘ধর্ষণের হুমকি’ দিয়েছে। এ নিয়ে উত্তাল হয়ে ওঠে সামাজিক মাধ্যম এবং ক্যাম্পাসের রাজনীতি। তবে শিবিরের পক্ষ থেকে এই অভিযোগকে ‘ষড়যন্ত্রমূলক’ ও ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ বলে উড়িয়ে দেওয়া হয়। পাল্টা বিবৃতি দিয়ে সংগঠনটি অভিযোগ করে, প্রকৃতপক্ষে ছাত্রদলের একটি পক্ষই শিবিরের কয়েকজন নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন অপপ্রচার চালাচ্ছে এবং নির্বাচনকে প্রভাবিত করতে চাচ্ছে। এছাড়া দুই সংগঠনের শীর্ষ নেতারা একে অন্যের বিরুদ্ধে নেতিবাচক বক্তব্য দিতে থাকলে বাড়তে থাকে উত্তেজনা। এ ঘটনায় উভয়পক্ষই আলাদা করে সংবাদ সম্মেলন, মানববন্ধন, প্রতিবাদ কর্মসূচি করেছে। ছাত্রদল হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে, তারা নারীর প্রতি সহিংসতার হুমকি কোনোভাবেই মেনে নেবে না এবং এ বিষয়ে প্রমাণসহ আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানায় সংগঠনটি। তবে শিবির জানিয়েছে, তারা এই ‘মিথ্যা অভিযোগ’ থেকে নিজেদের মুক্ত করতে প্রয়োজনে প্রশাসনের দ্বারস্থ হবে। ছাত্রদল কর্মসূচিতে নারীদের জোর করে নিয়ে এসেছে বলেও অভিযোগ তোলা হয়। এসব বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি না দিলেও ভোটকে কেন্দ্র করে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঠেকাতে তারা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে বলে জানা গেছে। তবে সাধারণ শিক্ষার্থীদের আশঙ্কা ডাকসু নির্বাচন বাংলাদেশের ছাত্র রাজনীতিতে দীর্ঘদিন পর একটি বড় ধাপ। তবে ব্যক্তিগত আক্রমণ, হুমকি এবং পাল্টাপাল্টি অভিযোগের সংস্কৃতি নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশকে বাধাগ্রস্ত করছে। এর ফলে শিক্ষার্থীদের মধ্যে আস্থাহীনতা তৈরি হতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যথাযথ পদক্ষেপ প্রত্যাশা করছেন শিক্ষার্থীরা। অনার্স তৃতীয় বর্ষে পড়ুয়া একজন শিক্ষার্থী বলেন, শুরুর দিকে সুন্দর পরিবেশ নিয়ে আমরা ভালো কিছু আশা করেছিলাম। কিন্তু দিন দিন পরিস্থিতি যেদিকে যাচ্ছে তাদের সাধারণ শিক্ষার্থীরা আতঙ্কে আছে। এখনই পরিস্থিতি সামাল দিতে না পারলে ভোটের আগে আরও খারাপ হতে পারে। তবে বড় সংগঠনগুলোর প্রার্থী ও কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে এমন টানটান উত্তেজনা নিয়ে দুঃশ্চিন্তায় আছেন স্বতন্ত্র প্যানেলের প্রার্থীরাও। নাম না করার শর্তে সম্পাদকীয় পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা একজন নারী প্রার্থী বলেন, পরিস্থিতি কোনদিকে যাচ্ছে আমরা কিছুই বুঝতে পারছি না। সাহস নিয়ে একা একা অনেক সময় প্রচারণা চালাচ্ছি। শেষ পর্যন্ত ভোট সুষ্ঠুভাবে হবে কি না, সেটা নিয়ে টেনশন হচ্ছে। ভোটারদের মধ্যেও উদ্বেগ আছে। তিনি বলেন, আশা করি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ভীতিকর পরিস্থিতি দূর করতে যথাযথ পদক্ষেপ নেবে।
ডাকসুতে জেতা লাগবে না, বেঁচে থাকতে চাই: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে ভিপি পদপ্রার্থী ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক আব্দুল কাদের বলেছেন,আমার ডাকসুতে জেতা লাগবে না, কেবল বেঁচে থাকতে চাই। এতোটুকু দয়া অন্তত আমাকে দেখানোর অনুরোধ। বৃহস্পতিবার দুপুরের দিকে নিজের ফেসবুক পোস্টে এই আকুতি জানিয়েছেন আবদুল কাদের। তিনি বলেন,সেই রাজাকার নিয়ে কথা বলার পর থেকেই যে শুরু হইছে, প্রতিনিয়ত সেটা আরো বাড়তেছে। তারপর থেকেই আমি ঘুমাতে পারি না, মাঝরাতে জেগে যাই; শরীর কাঁপতে থাকতে। একটা মানুষকে নিয়ে আর কত করবেন? মানুষের কতটুকুও বা ধৈর্য ক্ষমতা থাকে, আমি আর কতদিন নিতে পারবো জানি না। তিনি বলেন,কেবল অনলাইনে এই হেনস্তা আমার পর্যন্ত সীমাবদ্ধ থাকলেও মানা যাইতো, বাড়িতে গিয়ে আমার আম্মাকে পর্যন্ত কথা শুনাচ্ছেন! ১০ দিন আগের বক্তব্য কাট করে প্রপাগাণ্ডা না ছড়ালেও পারতেন। তিনি আরও বলেন, পুরা বক্তব্য তুলে ধরলে বক্তব্যের সারমর্ম বুঝতে পারতো মানুষ। কেবল তো শুরু, আরো পাঁচ দিন বাকি। ততো দিনে কী যে ঘটবে, সেটা ভাবতে গেলে আরো বেশি ট্রমাটাইজড হয়ে যাই।
 

নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

কমেন্ট বক্স